1 ইলীহূ আরও কহিলেন,
2 আপনি আমার প্রতি একটু ধৈর্য্য করুন, আমি আপনাকে শিক্ষা দিব, কারণ ঈশ্বরের পক্ষে আমার আরও কথা আছে।
3 আমি দূর হইতে আপন জ্ঞান আনিব, আমার নির্ম্মাতার উপর ধর্ম্মগুণ বর্ত্তাইব।
4 সত্যই আমার কথা মিথ্যা নয়, জ্ঞানে সিদ্ধ এক ব্যক্তি আপনার সহবর্ত্তী।
5 দেখুন, ঈশ্বর পরাক্রমী, তবু কাহাকেও তুচ্ছ করেন না; তিনি বুদ্ধিবলে পরাক্রমী।
6 তিনি দুষ্টদের প্রাণ রক্ষা করেন না, কিন্তু দুঃখীদের পক্ষে ন্যায় বিচার করেন।
7 তিনি ধার্ম্মিকদের হইতে চক্ষু ফিরান না; কিন্তু সিংহাসনোপবিষ্ট রাজগণের সঙ্গে তাহাদিগকে চিরকালতরে বসান, তাহারা উন্নত হয়।
8 তাহারা যদি শৃঙ্খলে বদ্ধ হয়, যদি দুঃখ-রজ্জুতে আবদ্ধ হয়;
9 তবে তিনি দেখাইয়া দেন তাহাদের ক্রিয়া, ও তাহাদের অধর্ম্ম সকল, যাহা সগর্ব্বে করিয়াছে;
10 তিনি উপদেশের প্রতি তাহাদের কর্ণ খুলিয়া দেন, তাহাদিগকে অধর্ম্ম হইতে ফিরিতে আজ্ঞা দেন।
11 তাহারা যদি কথা শুনে, ও তাঁহার সেবা করে, তবে সুসম্পদে স্ব স্ব আয়ু কাটাইবে, সুখে স্ব স্ব বৎসর সকল যাপন করিবে।
12 কিন্তু যদি না শুনে, তবে অস্ত্র দ্বারা বিনষ্ট হইবে, জ্ঞানের অভাবে প্রাণত্যাগ করিবে।
13 পামরচিত্তেরা ক্রোধ সঞ্চয় করে, তিনি তাহাদিগকে বাঁধিলে ত্রাহি ত্রাহি করে না।
14 তাহারা যৌবনকালে প্রাণত্যাগ করে, পুংগামীদের মধ্যে তাহাদেরও প্রাণ যায়।
15 তিনি দুঃখীকে দুঃখ দ্বারা উদ্ধার করেন, তিনি উপদ্রবে তাহাদের কর্ণ খুলিয়া দেন।
16 তিনি আপনাকেও সঙ্কটের মুখ হইতে বাহির করিয়া চালাইতে চাহেন; অসঙ্কীর্ণ প্রশস্ত স্থানে লইয়া যাইতে চাহেন, আপনার মেজ পুষ্টিকর দ্রব্যে সাজান হইবে।
17 কিন্তু আপনি দুর্জ্জনের বিচারে পূর্ণ হইয়াছেন; বিচার ও শাসন আপনাকে ধরিয়াছে।
18 যখন ক্রোধ আছে, সাবধান যেন আত্মপ্রাচুর্য্য দ্বারা ভ্রান্ত না হন, প্রায়শ্চিত্তের মহত্ত্ব আপনাকে ভ্রান্ত না করুক।
19 আপনার ঐশ্বর্য্যে কি কুলাইবে যে, আপনি দুঃখে না পড়েন? আপনার বলের বাহুল্যে কি কুলাইবে?
20 সেই রাত্রির আকাঙ্ক্ষা করিবেন না, যখন জাতিরা স্বস্থান হইতে প্রয়াণ করে।
21 সাবধান, অধর্ম্মের প্রতি ফিরিবেন না, আপনি ত দুঃখভোগ অপেক্ষা তাহাই মনোনীত করিয়াছেন।
22 দেখুন, ঈশ্বর আপন পরাক্রমে সর্ব্বোচ্চ, তাঁহার ন্যায় কে শিক্ষা দিতে পারে?
23 কে তাঁহার গন্তব্য পথ নিরূপণ করিয়াছে? কে বলিতে পারে, তুমি অন্যায় করিয়াছ?
24 মনে রাখিবেন, তাঁহার কার্য্যের মহিমা স্বীকার করা চাই, মনুষ্যগণ গান দ্বারা তাহা কীর্ত্তন করিয়াছে।
25 সকল মনুষ্য তাহা নিরীক্ষণ করিয়াছে, মর্ত্ত্যগণ দূর হইতে তাহা সন্দর্শন করে।
26 দেখুন, ঈশ্বর মহান্, আমরা তাঁহাকে জানি না; তাঁহার বর্ষ-সংখ্যার সন্ধান পাওয়া যায় না।
27 তিনি জলের বিন্দু সকল আকর্ষণ করেন, সেগুলি তাঁহার বাষ্প হইতে বৃষ্টিরূপে পড়ে;
28 জলদপটল তাহা ঢালিয়া দেয়, তাহা মনুষ্যদের উপরে প্রচুররূপে পতিত হয়।
29 মেঘমালার বিস্তারণ কেহ কি বুঝিতে পারে? তাঁহার চন্দ্রাতপের গর্জ্জন কে বুঝে?
30 দেখুন, তিনি আপনার চারিদিকে স্বীয় দীপ্তি বিস্তার করেন, তিনি সমুদ্রগর্ভ সমাবৃত করেন।
31 কারণ তিনি এই সকল দ্বারা জাতিগণকে শাসন করেন, তিনি প্রচুর পরিমাণে শস্য উৎপন্ন করেন।
32 তিনি আপন অঞ্জলি বিদ্যুতে পূর্ণ করেন, তাহাকে লক্ষ্য বিঁধিবার আজ্ঞা দেন।
33 তাহার নিনাদ তাঁহার পরিচয় দেয়, পশুপাল সকলও তাঁহার আগমন জানায়।